Home » Funny Story – হাস্যকর গল্প » ডাব চুরির ডিপ্রেশন।
- ডাব চুরি করার জন্য ডাব
গাছে উঠেছি। ঠিক তখন-ই
গার্লফ্রেন্ডের ফোন।
রিসিভ করতেই বলল......
.
বাবু একটু লুঙ্গী পরে লাইভে
আসবা?
.
হুট করে এমন কথা শুনে
মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।
এত রাতে ডাব গাছে
উঠেছি ডাব চুরি করতে আর
খাচ্চুন্নি লাইভ মারায়।
বললাম....
.
হপপ এত রাতে কেউ লাইভে
আসে?
.
প্লিজ বাবুটা আসো লাইভে।
হুরর আমি কাজ করতেছি।
.
কি কাজ করো এত রাতে?
.
তুমি বুঝবেনা।
.
এখনি নতুন লুঙ্গী পরে লাইভে
আসবা তুমি।
.
লুঙ্গী নাই।
.
তাহলে গামছা পরে লাইভে
আসো।
.
কি পাগলামি শুরু করলে
বলোতো?
ভালোবাসার অর্থ বোঝ
তুমি? সামান্য লুঙ্গী পরে
লাইভে আসতে বলেছি এটাই
পারোনা....
.
দেখো আলতুফালতু কথা
বলবানা।
.
কি আলতু ফালতু কথা বলছি
আমি?
.
আচ্ছা এই মাঝরাতে কি শুরু
করলে তুমি।
.
তাহলে লাইভে আসো।
.
যামুনা এহন।
.
আচ্ছা সত্যি করো বলতো
তুমি কি করো এখন?
.
জানুরে আমি ডাব গাছে
উঠেছি?
.
কিইইইই? তুমি এতরাতে ডাব
গাছে কেন?
.
ডাব চুরি করতে এসেছি।
.
কুত্তা তুই ডাব চোর?
.
আরে রাগছো কেন? বন্ধুরা
মিলেই এসেছি।
.
তোর সাথে কে কে?
.
সাইফ আর সাল্লু।
.
ছিঃ তুমি এতবড় চোর আমি
ভাবতে পারিনি।
.
আজব এটাকে চুরি বলছো
কেনো? শখ বলো সোনা।
.
তর সোনা তর কাছেই রাখ।
আমি কোন চোরের সাথো
রিলেশন রাখবনা।
.
বাবু এভাবে বলোনা
প্লিজ।
.
টুটটুট....
.
গালি দিয়ে ফোন রেখে
দিলো। নুহার হুটহাট এমন
রিয়াকশনে মুহূর্তে
ডিপ্রেশনে চলে গেলাম।
হায়রে! এত কষ্টের
গার্লফ্রেন্ড আমায় বুঝলনা।
মোবাইলে মনির খানের
গান জুরে দিলাম। গানের
শব্দ শুনে নিচ থেকে সাল্লু
বলল....
.
কিরে হারামি ডাব দেওয়া
বাদ দিয়ে কি করস?
.
ডিপ্রেশন কমাচ্ছি দোস্ত।
.
আগে ডাব দে..তারপর
ডিপ্রেশন কমা।
.
চোখ ডোলে পানি বের করে
কাঁদলাম কিছুক্ষণ। বুকে হাত
দিয়ে বুঝলাম ডিপ্রেশন
কিছুটা কমেছে। তারপর ডাব
ছিরে নিচে ফেললাম। দুই
তিনটা ডাব নিচে ফেলতেই
হঠাৎ কে যেন বলে উঠলো,
'ডাব চুরি করে কোন
হালায়রে?'
.
কথা শুনেই বুকটা ধুক করে
উঠলো। কণ্ঠ শুনে বুঝতে
পারলাম এটা মোল্লা
বাড়ির রাখাল। ধরা পরলে
খবর আছে। কল্লা কেঁটে
হাতে ধরে দিয়ে দিবে। কি
করব বুঝতে পারলামনা।
মোবাইল লুঙ্গীর পেছনে
কোমড়ে পেছিয়ে রাখলাম।
হাতে টর্স লাইট আছে। 'কে
রে, কুন হালায় ডাব চুরি
করে।' আবারো শব্দ ভেসে
উঠলো। সাইফ আর সাল্লু
কোথাও লুকিয়েছে। ওদের
দেখার জন্য লাইট জালালাম
দেখলাম একটা ঝোঁপে ডাব
হাতে বসে আছে। অমনি
রাখাল বলে উঠলো শালা
পাইছি আজকে।
.
রাখাল গাছের নিচে
উপস্থিত। ভয়ে আমার
কলিজা শুকিয়ে গেলো। সে
নিচ থেকে লাইট জালালো।
আমাকে দেখেই বলল....
.
হালা নাম আইজকা। ডাব
চুরি ছুডামু....
.
কি করব বুঝতে পারলাম না।
নিজেকে বাঁচানোর জন্য
উপর থেকে থুথু ছুরলাম। থুথু
পরলো সরাসরি রাখালের
মাথায় এতে সে
তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো।
বলল....
.
হালায় থুথু দিছে, তুই নাম
আইজকা।
.
এদিকে আমার বাতাস বের
হবার মতন অবস্থা। এবার
দিলাম উপর থেকে ডাব
ছেরে যাতে রাখালের
মাথায় পরে। ভয় পেয়ে
রাখাল দূরে সরে গেলো।
অমনি আমি টর্চের লাইট
রাখালের চোখে ধরলাম।
রাখাল চোখ বুজলো।
সাইফকে বললাম....
.
ডাব ঢিল দে।
.
সাইফ সাথে সাথে ঝোঁপ
থেকে ডাব দিলো ঢিল। ঢিল
সরাসরি লাগলো রাখালের
পিঠে। ডুম করে শব্দ হলো।
রাখাল মাগো বলে চিৎকার
দিলো। সাইফ আবার ঢিল
দিলো, ঢিল গিয়ে লাগলো
এবার দুই রানের চিপায়।
মানে ওইখানে, রাখাল
লুঙ্গী সহ লজ্জাস্থান চেপে
ধরলো। ভয়ে সাইফ আর সাল্লু
ঘুরান্টি দিয়ে দৌঁড়।
জানের আাশা বাদ দিয়ে
রাখালো ওদের পিছে পিছে
দৌঁড়। আমি তড়িঘড়ি করে
গাছ থেকে নামলাম। লুঙ্গী
কাচা দিয়ে সাইফকে
বাচানোর জন্য আমিও
রাখালের পিছে পিছে
দৌঁড়।
.
সবার আগে সাইফ তারপর
সাল্লু দৌঁড়াচ্ছে। তার
পিছে রাখাল দৌঁড়াচ্ছে আর
বলছে....
.
হালা খাড়া।
.
ভাই মাফ কররে আঁ আঁ আঁ....
(সাল্লু)
.
আয় পারলে ধর ট্যাঁউ
ট্যাঁউ...ডিংকা চিকা,
চিকা চিকা। (সাইফ)
.
সাহস থাকলে খাড়া।
(রাখাল)
.
সাইফ ভালোই মজা পাচ্ছে।
কারণ ও সিউর ওকে ধরতে
পারবেনা। এদিকে বেচারা
সাল্লু সমানে বলছে...'ভাই
আমারে ছেড়ে দে..'
.
আমি হাতে থাকা টর্চ লাইট
জালিয়ে পিছে পিছে
দৌঁড়াচ্ছি। সাল্লুর লুঙ্গীর
কাচা খুলে গেছে।
দৌঁড়ানোর সাথে সাথে
ফারফার শব্দ হচ্ছে।
বেচারা এক হাতে লুঙ্গী
ধরে আছে তার উপর আমি ওর
দিকেই লাইট ধরেছি।
রাখাল চোর চোর বলে পিছে
দৌঁড়।
.
কোনদিকে দৌঁড়াচ্ছি তার
কোন ঠিক নাই। ছোট বেলা
থেকেই দৌঁড়
প্রতিযোগিতায় ফার্স্ট হয়ে
আসছি। তাই আমি জোরে
দৌঁড়ে রাখালের মাথায়
ঠুয়া মারলাম। তবুও
রাখালের কোন হুশ নেই সে
সাল্লুর পিছেই পরে আছে।
বেচারা সাল্লু পরেছে
বিপাকে। জান বাঁচানোর
জন্য লুঙ্গী ছেরে দিয়েই
সাল্লু রাস্তার পাশে থাকা
ধান খেত ফাটিয়ে দৌঁড়।
রাখালো সেদিকে দৌঁড়।
আমিও পিছে পিছে দৌঁড়।
সাইফ কোন দিকে গেছে
তার ঠিক নাই। ধান খেতের
আইলে যে জাল দেওয়া
ছিলো সেদিকে সাল্লুর
খেয়াল নেই। বেচারার পা
জালের সাথে আটকে
হুরমুড়িয়ে পরে গেলো।
নিজের দৌঁড়ের গতি
কন্ট্রোল করতে না পেরে
রাখালো সাল্লুর উপরে পরে
গেলো। সাল্লু ভয়ে মাগো
বলে উঠলো। অমনি ঠাসসস
ঠাসসস ডুমডুম টুরুসসসস শব্দ
হলো। আমার বুঝতে বাকি
রইলো কি হয়েছে। আমার
লাইটের আলো সাল্লুর দিকে
ধরতেই সাল্লু গায়ের সমস্ত
শক্তি দিয়ে নিজেকে
ছাড়ালো। আবার দিলো
দৌঁড়। রাখাল খেপছে সেউ
দৌঁড়। সামনে নদী থাকায়
সাল্লু লাফ দিয়ে নদীতে
নেমে সাঁতারে সাঁতরে
যাচ্ছে। আমিও টর্চ লাইট অফ
করে উল্টো দিকে দৌঁড়ে
বাসায় চলে আসলাম।
.
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো
চিৎকার চেঁচামিচিতে। ঘুম
থেকে উঠে দেখলাম আম্মা
পুরো বাসা মাথায় তুলে
নিয়েছে। আর বলছে.....
.
এ বাড়িতে কোন চোরের
জায়গা হবেনা।
.
জি আম্মাজান আমিও সহমত।
(সাইফ)
.
সাইফের কথা শুনে অবাক
হলাম। ও তো আমাদের সাথে
চুরি করেছে এখন ভালো
সাজলে কেমনে। আর চুরির
কথা এরা জানলো কেমনে?
নিশ্চয় রাখাল পুরো গ্রাম
ছড়িয়েছে। ইজ্জতের ফালুদা
করছেরে বেয়ান। আমাকে
দেখেই আম্মা বলল....
.
বাসা থেকে বের হ।
.
কিউ? আমি কি করলাম?
.
তুই কোন কথা বলবিনা
আজকে তোর কারণে সাল্লুর
অবস্থা খারাপ। ছিঃ চোর....
.
ওর আবার কি হলো?
.
বের হ তুই....
.
আম্মা রাগি দৃষ্টিতে
তাকালো। অবস্থা
বেগতিক দেখে মিঃ বিনের
মতন ভাব ধরে বাসা থেকে
বের হলাম। সাল্লুকে দেখার
জন্য হাসপাতালে গেলাম।
আমাকে দেখেই সাল্লু বলল....
.
কেমন আছিস নানা, তোর
শরীর ভালোতো? বোস দুজনে
কানামাছি খেলি।
.
সাল্লুর মুখ থেকে নানা আর
এমন কথা শুনে আকাশ থেকে
পরলাম। আংকেলের দিকে
তাকালাম। আংকেল
সাল্লুকে বলল....
.
বাবা এটা সোহান, তোর
বন্ধু।
.
উফফ তুমি চুপ করোতো
দুলাভাই, দিনদিন তোমার
মাথায় সমস্যা হচ্ছে। ডাঃ
দেখাও....
.
নিজের বাবাকে দুলাভাই?
আস্তাগফিরুল্লাহ! সাল্লুর কি
হয়েছে বোঝার জন্য আন্টির
দিকে তাকালাম। আন্টি
কেঁদে দিলেন। দৌঁড়ে ডাঃ
এর কাছে চলে গেলাম। ডাঃ
বলল....
.
অতিরিক্ত ভয়ের কারণে
ছেলেটা আংশিক পাগল হয়ে
গেছে।
.
এটা ঠিক হবেনা?
.
জানিনা, আমরা কিছু বলতে
পারছিনা।
.
ডাক্তারের কাছ থেকে চলে
আসলাম। এই প্রথম নিজেকে
বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।
আমার কারণে সাল্লু পাগল!
কিন্তু আফসোস ডাব খেতে
পারলাম। আবারো
ডিপ্রেশনে চলে গেলাম