Home » Ghost Story – ভূতের গল্প » মাঝ রাতের ট্রেন।
#ট্রেন____
ঘটনাটি প্রায় ৩ বছর আগের।
আমি মাঝে মাঝেই
যশোরের রেল স্টেশনে
যেতাম। সেখানে ঘুরতে
যেতাম। এমন এক শুক্রবার
বিকালে যেয়ে দেখি
স্টেশনে একটা মালগাড়ী
দাঁড়িয়ে আছে। সেটি খুলনা
থেকে ছেড়ে এসেছে। অনেক
সময় হাঁটার পর মালগাড়ীর
শেষ বগিতে দেখি একজন
বসে আছে। অনেকে জানেন
মালগাড়িতে শেষ বগিতে
মাস্টার থাকায় একটা ছোট
বগি থাকে। ওনার কাছে
যাওয়ার পর আমার পরিচয়
দিয়ে বলি আমার জেলার
বাড়ি ফরিদপুর।
আগ্রহ খুঁজে পেয়ে অনেক
আলাপ করলাম। এক পযার্য়ে
আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি
আপনার কোন ভয়ের ঘটনা
আছে কি না? উত্তর না
দিয়ে অন্য কথা বললো। আমি
আবার জিজ্ঞেস করাতে
উনি বললেন বাদ দেও। তার
পর অনেক অনুরোধ করি।
এবার তিনি রাজি হলেন। খুব
মনোযোগ দিয়ে শুনি।
আমি ঘটনাটি তার ভাষায়
বলছি। প্রায় সাড়ে ৩ বছর
আগে বেনাপোল থেকে সার
নিয়ে রাত ১১ টায় খুলনার
উদ্দেশ্যে রওনা হই। সে
রাতে আমার কলিগ ছুটিতে
থাকায় আমি একাই
দায়িত্বে থাকি। এর পর
ট্রেন চলতে থাকে। আমি
রেডিও শুনতে থাকি। একটা
সময় ট্রেন মাঠের মধ্যে
দিয়ে সারি সারি গাছের
পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো।
আবহাওয়াটা ছিল গরম। তাই
বাতাসে ভালোই
লাগছিলো। হঠাৎ বড় একটা
বট গাছের পাশে দিয়ে
যাওয়ার সময় কি যেন
বগিতে খুব জোরে একটা শব্দ
হলো।
মনে হলো কেউ কিছু একটা
করেছে। আমি পাশে যেয়ে
লাইট মেরে দেখি কিছুই
নেই। কিছু সময় এদিক ওদিক
লাইট মেরে না পাওয়ায়
ভিতরে এসে দেখি যে
রেডিওটা কোন শব্দ করছে
না। লাইট মারতেই বুঝি
লাইটের আলোর তেজ খুব
হালকা হয়ে আসছে।ভাবলাম
ব্যাটারির চার্জ শেষ তাই
এই অবস্থা। হালকা আলোয়
কিছুটা অনুমান করে খুঁজতে
থাকি রেডিও। কিন্তুু
পাচ্ছি না।
কেমন যেন ভয় মনে জড়ো
হতে থাকলো। এমন সময়
পেছনে বাহিরে বিড়ালের
ডাক শুনতে পেলাম।চলন্ত
ট্রেনে বিড়াল আসবে কি
ভাবে? তার পরে ভয় আরো
বেড়ে গেল। অনেক সাহস
নিয়ে একটু তাকিয়ে দেখি
সেটা স্বাভাবিক
বিড়ালের থেকেও অনেক
বড়। কি করবো বুঝতে
পারছিলাম না।ট্রেন
ড্রাইভার কে ফোন দেওয়ার
জন্য বের করলাম
মোবাইলটা। জানি ফোন
দিয়ে কিছুই হবেনা। কিন্তুু
অবাকই হলাম ফোনটাও বন্ধ
দেখে
এদিকে বিড়ালের ভয়ংকর
শব্দ আমাকে পাগল করে
তুলছে। আচমকা দেখি
জানালার বাহিরে আমার
রেডিও বাজছে। কি যেন
সেটা ধরে চলন্ত ট্রেনের
বাতাসে ভাসছে। রেডিও
ছাড়া কাউকে দেখতে
পাচ্ছিলাম না। তবে
ভাসছে।মনে মনে দোয়া
পড়তে থাকি আর কখন আলো
দেখবো সেটাই ভাবতে
থাকি। সময় যেন স্থির হয়ে
আছে। অনেক চেষ্টা
করেছিলাম নিজেকে
স্বাভাবিক করতে।
এবার অনেক গুলো বিড়ালের
ডাক শুনতে পাচ্ছি। আমি
ভয়ে বগির রুমের এক কোনায়
জড়ো হয়ে বসে আছি। খুব
জোরে ট্রেনের বগিতে
কেউ যেন থাবা দিচ্ছে।
বাইরে বিকট শব্দ হচ্ছে
অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ
শুনতে পাচ্ছি। বাইরের
দিকে ঘাড় ঘুরাতে চাঁদের
হালকা আলোতে দেখি
অনেক গুলো বিড়াল আমার
দিকে এগিয়ে আসছে সে
গুলো। মুখ দিয়ে চিৎকার
বের হয় না বড় একটা বিড়াল
আমার সামনে এসে চিৎকার
করছে।
আমি উঠে দাঁড়াত চাচ্ছি
কিন্তুু পারছি না। অনুভব
করি আমার গায়ে লোমশ
হাতের ছোয়া। আমার ঘাড়
সোজা করতেই দেখি শুধু
দাঁতের পাটি আর চুল ছাড়া
কিছুই নেই। এমন একটি সাদা
কালো ছায়ার মতো।
আর মনে হয় সেই হাত আমি
ধরে ফেলি সাথে সাথে
প্রচন্ড জোরে একটা চড়
আমার গালে অনুভব করি
আমি সেন্স হারাই এর পর
আমার কিছু মনে নেই।
যখন সেন্স ফিরে তখন দেখি
নোয়াপাড়ার স্টেশনের
লোকেরা আমার মাথায়
পানি ঢালছে। আমার বাম
কানে এখনো আমি কম শুনি।
আর রেডিও, মোবাইল,লাইট
কিছুই খুঁজে পাইনি। এর পর
থেকে রাতে একা ডিউটি
করি নি। তবে সেই জায়গা
দিয়ে ট্রেনে গেলে এখনো
ভয় লাগে।
সমাপ্ত।