Home » Romantic Love Story – রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প » এই শহরে মেঘের মিলন। ২য় পর্ব।
এই__শহরে_মেঘের_মিলন#
#পার্টঃ০২
#Writer:#মারশিয়া__জাহান_
মেঘ
৫.
"বাড়ি ফিরে যাচ্ছি
মানে? ও বাড়িতে এখন
আমরা কিভাবে যাবো?
তোমার বাবা তোমার সৎ
মায়ের প্রতি এতোটাই ঝুঁকে
পড়েছেন যে তোমায় মে*রে
ফেলতেও একবার ভাববেনা।
তোমার বাবা আগের মতো
নেই শাফি।"
"আমি জানি মেঘ। কিন্তু
এইটাওতো হয়না তাইনা? যে
এইভাবে দিনের পর দিন
শুশুরবাড়ীতে ঘর জামাই হয়ে
থাকবো।"
আমি শাফির দিকে
পলকহীনভাবে তাকিয়ে
রইলাম। ছেলেটা যে ভেতর
থেকে শেষ হয়ে যাচ্ছে তা
সে না বললেও আমি জানি।
আমি শাফির হাত ধরে
বিছানায় বসিয়ে বললাম,
"বসো। এইখানে। তোমার
অনেক খা*রা*প লেগেছে
রুপার কথাতে তাইনাগো?"
"না না..একি বলছো মেঘ?
রুপা আমার ছোট বোনের
মতো। খারাপ লাগবে
কেনো? ওর কথাতে আমি
কিছু মনে করিনি।"
"তুমি কিছু না বললেও আমি
জানি শাফি৷ তবে দেখো,
আমাদের দূর্দিন খুব
তাড়াতাড়ি আল্লাহ
তায়ালা সমাপ্তি
ঘটাবেন।"
৫.
আমাদের গ্রামের নাম
শীতলপুর। গাছগাছালিতে
ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রাম।
আমরা ৩ বোন। মেঘ,
রুপা,অর্পা। অর্পা আর আমার
বিয়ে হয়েছে। আর রুপা
এবার মাধ্যমিক দিবে।
আমাদের বাড়িতে ৪ টা ঘর।
নাহ...পাকা নয়, টিনের ঘর।
একটাতে আম্মা-আর আব্বা
থাকে আর আরেকটাতে
রুপা। অবশ্য বিয়ের আগে
আমি রুপা আর অর্পা
একসাথেই ঘুমোতাম। আমি
আর শাফি বর্তমানে থাকি
হচ্ছে আমাদের বাড়ির এক
কোণে পড়ে থাকা আলগা
টিনের ঘরটায়। ঘরে বেশি
কিছু নেই...একটা খাট আর
ছোট টেবিল। আমাদের
বাড়ির গাছের কাঠ দিয়ে
তৈরী করা।
"মেঘ...জামাইরে লইয়া
খাইতে আয়।"
আম্মার ডাকে আমি আর
শাফি উঠে দাঁড়ায়। শাফি
অসহায় চাহনি নিয়ে বললো,
"তুমি রাগ করোনা মেঘ। খুব
তাড়াতাড়ি একটা ফোন
আবার কিনবো।"
৬.
"কিরে মেঘ খাইতাছোস না
ক্যান?"
আব্বার কথায় রুপা মা আর
শাফি আমার দিকে
তাকায়। খাবার ঘর
আমাদের। এই ঘরে শুধু খাবার
খাওয়ার সময় আসা হয়।
মাটির ছোট একখানা খাঁচা
বলা চলে।
"মেঘ খাচ্ছোনা কেনো?"
শাফির প্রশ্ন শুনে মনে মনে
বললাম,
"ফোন বি/ক্রি করার টাকা
দ্বারা খাবার আমি
কিভাবে ঢু*ক গিল*বো
শাফি।"
শাফি বোধহয় বুঝতে
পেরেছে আমার মনের কথা।
তাই আমাকে উদ্দেশ্য করে
বললো,
"যাও মেঘ তুমি তোমার
খাবার ঘরে গিয়ে খেয়ে
নাও।"
আমি নিজেকে সামাল
দিলাম। তারপর হেসে
বললাম,
"কেনো ঘরে যাবো কেনো?
এইখানেই খাবো।
সারাজীবন কি আর আম্মা-
আব্বা আর রুপার সাথে বসে
খাওয়ার সুযোগ পাবো?"
"সারাজীবন'ই সুযোগ পাইবা
আপা। কারণ তোমাদের ভাব
দেখে মনে হয়, তোমরা আর
এইখান থেকে যাবেনা।
সারাজীবন আমাদের
বাড়িতেই পড়ে থাকবে।"
রুপার কথা শুনে ভীষণ
কা*ন্না পেলো আমার।
হয়তো গড়িয়ে এখনি পড়বে
তাই তাড়াতাড়ি করে উঠে
পড়লাম ওখান থেকে।
"তুই এইভাবে মেঘরে
কথাখান কইলি ক্যান রুপা?"
"তো কি বলবো আব্বা? মানুষ
বিয়ে দেয় শুশুরবাড়ী
থাকার জন্য। আর আপা?
বিয়ের পরও এইখানে এসে
থাকতে হচ্ছে। বিয়েটা আজ
ভালোভাবে খোঁজ খবর
নিয়ে দিলে এমন হতোনা।"
"বিয়াডাতো আমরাই দিছি
রুপা।"
"ওইটাইতো ভুল করছো। এমন
জাতে বিয়ে দিয়েছো যেই
জাতে দুই বিয়া করার
রেকর্ড আছে।"
শাফি আর খেতে পারলোনা
উঠে পড়লো।
"আরে জামাই উইঠা গেলা
যে?"
"আমার পে*ট ভরে গেছে
আব্বা।"
৭.
"তুমিও খাওনি তাইনা?"
শাফিকে প্রশ্নটা করতেই
শাফি কথা এড়াতে বললো,
"ছাড়োতো। যা খেয়েছি
তাতেই পে*ট ভ*রে গেছে।
আমার বউটার বুঝি অনেক মন
খা*রা'প হয়ে গেছে?"
আমার কো/মড় জ*ড়ি*য়ে
কথাটা বললো শাফি। আমি
বুঝতে পেরে বললাম,
"আমি না হয় রা/গ করে না
খেয়ে এসেছি তুমি কেনো
না খেয়ে এলে?"
"আমার বউ যেইখানে
অপ*মা*নিত হয়েছে,
সেইখানে আমি কি করে
খেতে পারি বলোতো?"
৮.
"কে ওখানে কে?"
কথাটি বলেই রুপা খাবার
ঘরের লাইট অন করলো।
শাফির ঘুম হচ্ছিলোনা
ক্ষু*ধা*র কারণে৷ আমারও
প্রচন্ড ক্ষু*ধা পেয়েছিলো
তাই খাবার নিতে
এসেছিলাম খাবার ঘরে।
রুপা আমার দিকে তাকিয়ে
বললো,
"চি আপা...রাতে সবাই
ঘুমিয়ে পড়তেই চু/রি করে
ভাত খেতে শুরু করলি!"
অবাক হলাম আমি। নিজের
বাড়িতে নিজে নিয়ে
খেলেও চো/র বলে নাকি!
"একি বলছিস রুপা? তোর
দোলাভাইয়ের ঘুম
আসছিলোনা না খেয়ে
তাই..."
"থাক আপা আর বলতে
হবেনা। সেইটাতো বললেই
পারো, স্বামী বাজার
এনেছে বলে তা খেয়ে
ও*শু*ল করছো।"
চোখ দিয়ে ট*প*টপ করে
পা*নি গড়িয়ে পড়ছে৷
খাবারটা না নিয়েই
খাবার ঘর থেকে বেরিয়ে
এলাম। টাকা দিয়ে দুনিয়া
চলে। আজ আমার স্বামীর
টাকা নেই বলে যা ইচ্ছে তা
বলে ফেলতে পারছে রুপা।
৯.
"খাবার আনোনি মেঘ?"
"কিসের খাবার হ্যাঁ? বি/ষ
আনতে পারোনা বাজার
থেকে? খেয়ে ম*রে যেতাম
দুজনে৷ শুশুরবাড়ীতে এসে
পড়ে থেকে রাতে আবার
খাবার চাও কেনো? বুঝনা?
এটা অনেকে ভালো
পায়না।"
আমি কথাগুলো বলতে বলতে
কেঁ*দে দিলাম। শাফি
অবাক হয়ে তাড়াতাড়ি
বিছানা থেকে নেমে
আমার বু*কে জ/ড়ি/য়ে ধরে
বললো,
"কি হয়েছে মেঘ? এমন
পাগলামো করছো কেনো?
কি হয়েছে হ্যাঁ? কেউ কিছু
বলেছে হ্যাঁ? বলোনা কি
হয়েছে?"
শাফি আমাকে পা*গ*লের
মতো শান্ত করার চেষ্টা
করছে। কিন্তু মনের বি/ষা/দ
কি আর শান্তনায় মি*টে!"
চলবে....
এই শহরে মেঘের মিলন। - Part: 1